শিরোনাম

[getTicker results="10" label="random" type="ticker"]

পাহাড়িকার পথে পথে

আশরাফুল হক


এ পথ ফুরোবার নয়?
হৃদয় আমার শীতলতায় ভিজে ভিজে আসছে। শিশির ঝরছে চোখের জমিনে, পাপড়ির ডগায়। খানিকপর কপোলদেশে আবিষ্কার করলাম হৃদয়োদ্গত দু'তিন শিশিরবিন্দুর অবিরল ধারা। আমার হৃদয় শীতল করেছিলো এক স্নিগ্ধ সুরেলা গানের ঋতু। শেষ রাতের এই রহমঝরা মুহূর্তে জীবনের ভুলগুলো শুধরে নেওয়ার বাণীপ্রধান গান—এলাহী তেরি চৌকাঠ পর ভিখারী বান কে আয়া হু...৷ এরপর আর কিছু ভালো লাগছে না, যখন দেখছি এখনও গাড়ি জায়গা থেকে নড়ছে না। প্রায় দু'ঘণ্টা হলো, চট্টগ্রামের পথে যানজটে পড়েছি। হায়, রাত আর কদ্দূর! চট্টলা কতো দূর?
৪ অক্টোবর ২০১৪

আবার আসিবো ফিরে
এসেছিলাম তপ্ত তাঁতাল এক দুপুরে। গোধূলি রাঙা সারাটা বিকেলে তোর রূপের সোনালি ছটা মেখেছিলাম আমার হৃদয়-কায়াতে। সাঁঝের ঘরে তোর সবুজ ভুবনে উপচে পড়েছিলো দুধেল চাঁদ। বর্ণিল সাজে সেই রূপোলি বাসরে তোর কোলে শুয়েছি এক রাত্তি। কুয়াশার জলে তোর ভেজা হিম ভোরে আমায় জড়ালি তোর সবুজ চাদরে। পাহাড়ের রাতে আমার পাহাড়িকা ঘুম; মুখ ধুয়ে দিলি তোর ঝর্ণার স্রোতে। ঐ দেখা যায় তোর নীলাচল শৃঙ্গ, ঐ ঐ তো, এ পাহাড় থেকে নয় বেশি দূরে। তোরে ভোলা যায় না, আমি আবার আসিবো ফিরে।
৫ অক্টোবর ২০১৪

সবুজ আঁচলের হাতছানি
রুমা! বড়ো আশা করে এসেছিলাম তোমার এখানে। আর এই সাঁঝের বেলা বৃষ্টিতে ভিজছো তুমি। বাতাসের তালে তালে এলেদুলে নৃত্য করছে তোমার গোটা দেহ, প্রতিটি অঙ্গ-প্রতঙ্গ। কী আর করবো, অসহায় চোখে তোমার এক ঘরে বসে দেখছি ভেজা আঁচলে জড়োসড়ো তোমায়। খুব সুন্দর তুমি। বড়ো আবেদনময়ী তোমার রূপ, ভেজা দেহে তোমার তুমুল নৃত্য। আশা ছিলো, তোমার সবুজ আঁচল ছুঁয়ে ছুঁয়ে দেখবো। কিন্তু তুমি এখন ভিজে জবুথবু। আমার বুক দুরুদুরু করছে৷ ঐ আঁধারও নেমে এলো বলে। এখন আর নয়, ভালোভাবে নেয়ে নাও, সেজেগুজে নাও, কাল সকালে। ঐ পাহাড়টার পাদদেশে গিয়ে কথা হবে তোমার সঙ্গে। একান্ত মনে, কেউ দেখবে না। শুধু আমি, সোনামাখা প্রভাতী সূর্য আর তোমার সবুজ আঁচলের হাতছানি।
৫ অক্টোবর ২০১৪

রোমান্টিক স্বপ্ন
ক্লান্ত দুপুর। শ্রান্ত চোখ দুটি। পাঁচ মিনিট হলো মাত্র৷ নাহ, আর ঘুমোতে পারলাম না। সাংগু নদীর ওপার যেতে হবে। বিশাল সাঁকো৷ কেমন নেতিয়ে নড়বড়ে। মাঝ-সাঁকোতে যেতেই পঁচা সুপারি গাছটা কেঁপে উঠলো। সঙ্গে আমার অন্তরটাও। উপায়ন্তর না পেয়ে কাঁধে ব্যাগসুদ্ধ ঝাঁপিয়ে পড়লাম নদীতে। ভাগ্যিস, স্রোতস্বিনী হলেও জল কোমর তক। কোনোমতে তীরে এলাম। আমার হাত ধরলেন নওমুসলিম বেলাল ভাই। বললেন, ‘উঠুন।’ লাফিয়ে উঠে ঘুম ভাঙ্গা চোখে লিখে ফেললাম রোমান্টিক স্বপ্নটি।
৬ অক্টোবর ২০১৪

পাহাড়ি ঈদ উদযাপন
যাপিত জীবনে এই প্রথম ইমাম হয়ে ঈদের নামাজ আদায়। নামাজ শেষে নওমুসলিমদের জন্য দুটি পশু জবাই শেষে বান্দরবানে জোহর আদায় করলাম। এখানেও নওমুসলিমদের মাঝে গোশত বণ্টন শেষ। একটুপর রাঙ্গামাটির গাড়ি ছেড়ে দেবে। আগামীকাল সেখানে পশু জবাই হবে। এরপরের খবর নিয়ে আবার আসবো। চায়ের কাপটাও শেষ। আলবিদা৷
৬ অক্টোবর ২০১৪

হৃদয়-বাতায়নে মায়ার বিতান
রুমা! সত্যি বড়ো বেশি ভালোবেসে ফেলেছি তোমাকে৷ হৃদয়ের গহীন কন্দরে জায়গা করে নিলে তুমি। এই ঊষার প্রার্থনায় নিবিষ্ট মননে আমার মনের মায়াবী পর্দায় দোল খেয়ে উঠলো তোমার প্রকৃতি। আমার হৃদয়-বাতায়নে তোমার মায়ার বিতান৷ অন্তরজুড়ে ঝিলকিয়ে ওঠে তোমার সবুজের অন্তরাল। আমার স্মৃতির মিছিলে তোমার রঙিন মাকাল। হ্যাঁ রুমা! সত্যি বলছি, কবির কলম আজ রাজভিখেরি তোমার রূপের ভুবনে, তোমার স্বর্গীয় সন্নিবেশে৷ রুমা! আমার মাতৃভাষা আমার জীবনের মধ্যে এমন পুষ্পিত হয়ে ওঠেনি, যাতে নিজের অন্তরকে বাইরে টেনে আনতে পারি। নতুবা এই মুগ্ধবোধ তোমার রূপের ছটা ছড়িয়ে দিতাম পৃথিবীর সব মনুষ্য-হৃদয়ে৷
৭ অক্টোবর ২০১৪

পাঠাধিকার সবার, মন্তব্যাধিকার শুধুই অভিযাত্রীর
বান্দরবান জেলার 'রুমা' থানার প্রাকৃতিক লোভনীয় রূপ-মধুরিমা নিয়ে স্বেচ্ছায় হেয়ালিভরা দুটি ভাবনা উপস্থাপন করেছিলাম। আমার কল্যাণার্থী সমাজের দৃষ্টিতে পড়েছে প্রবলভাবে। সকলকে আন্তরিক জাযাকাল্লাহ। অনেক বন্ধু দেশের বাইরে থেকেও মিষ্টি ভাষায় ঝাঁঝালো প্রতিবাদে আমাকে আদর্শচ্যুত বলে অভিহিত করেছেন। শোকরিয়া। আসলে ভাষার পবিত্রতা-অপবিত্রতা নির্ভর করে ভাষ্যিকের অন্তরাবস্থার ওপর। কিন্তু কেউ কি আমার হৃদয় চিরে দেখেছেন! অন্তরালোকসম্পন্ন ব্যক্তিবর্গ অন্তরসম্পৃক্ত একটি বিষয়ের মর্মোপলব্ধি না করে প্রকারান্তরে আপন অঙ্গনের একটি বৃক্ষের মূলোৎপাটন করছেন! এভাবে মঙ্গ ল ঘরে আসে? সাহিত্যের পাঠাধিকার সবার, মন্তব্যাধিকার শুধুই এ দুর্গম পথের অভিযাত্রীর।
অক্টোবর ২০১৪

ফেরা
সকালে ঝুলন্ত সেতু ঘুরে এসে গরু জবাই করতে গিয়ে আমার ডান পা রক্তাক্ত। রাঙ্গামাটি অন্তর্গত বিস্তীর্ণ রাজস্থলি থানার ৬৭টি মুসলিম অনাথালয়ে গোশত বিতরণ শেষে সেখান থেকে প্রত্যাবর্তন। রাংগুনিয়ার লিচুবাগান, কাপ্তাই লেক হয়ে বিলাইছড়ি সেনাক্যাম্প। সেনাক্যাম্পে পশু জবাই করে আশপাশে গোশত বিতরণ শেষ। দায়িত্ব পালনে আছেন মাওলানা মাহমুদ গুনবি। দিন শেষে ইনশাআল্লাহ, রাতেই বান্দরবানে প্রত্যাবর্তন।
৭ অক্টোবর ২০১৪

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ